Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
ইট ভাটায় তদারকি
ছবি
ডাউনলোড

২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রবিবার কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার বালুতুপা এলাকায় এ তদারকি কার্যক্রম পরিচালিত হয়। উপলক্ষ ছিল স্থানীয় ইট ভাটাগুলো বিএসটিআই অনুমোদিত আকারে (দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতায়) ইট প্রস্তুত করছেন কিনা সেটা সরেজমিনে দেখা। বিএসটিআই এর BDS 208 : 2009 অনুযায়ী অনুমোদিত আকার যথাক্রমে দৈর্ঘ্যে ২৪ সেন্টিমিন্টার বা ৯ দশমিক ৪৫ ইঞ্চি, প্রস্থে ১১ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার বা ৪ দশমিক ৫৩ ইঞ্চি এবং উচ্চতায় ৭ সেন্টিমিটার বা ২ দশমিক ৭৬ ইঞ্চি। বিষয়টি বাস্তবে কী এটা সরেজমিনে দেখতে এ তদারকি কার্যক্রম।  

 ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ২১(ঘ) ধারায় বলা হয়েছে মহাপরিচালক বা তা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা “কোন পণ্যের বিক্রয় বা সরবরাহের ক্ষেত্রে ওজন বা পরিমাপে কারচুপি করা হইতেছে কিনা উহার তদারকি করিয়া প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ” করবেন। কী ব্যবস্থা মহাপরিচালক বা তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গ্রহণ করবেন? এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার আইনের ৪৮ ধারায় বলা হয়েছে “কোন ব্যক্তি কোন পণ্য সরবরাহ বা বিক্রয়ের সময় ভোক্তাকে প্রতিশ্রুত পরিমাপ অপেক্ষা কম পরিমাপে উক্ত পণ্য বিক্রয় বা সরবরাহ করিলে তিনি অনূর্ধ্ব এক বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।” অন্যদিকে আইনের ৪৯ ধারায় বলা হয়েছে “কোন পণ্য সরবরাহের উদ্দেশ্যে কোন ব্যক্তির দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দৈর্ঘ্য পরিমাপের কার্যে ব্যবহৃত পরিমাপক ফিতা বা অন্য কিছুতে (যেমন ইট তৈরির ফরমায়) কারচুপি করা হইলে তিনি অনূর্ধ্ব এক বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।”

এবার আসা যাক মাঠে। দেখা যাক কী ঘটে! বিকাল আনুমানিক চারটা। জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মো: আছাদুল ইসলামের নের্তৃত্বে জেলা পুলিশ, ক্যাব কুমিল্লা ও সিভিল সার্জন অফিসের সার্বিক সহায়তায় একটা টিম প্রস্তুত। গন্তব্য কুমিল্লা শহরের একেবারে কাছে দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে বালুতুপা ও বাজগড্ডা এলাকা।  

শুরুতেই বিখ্যাত ইট ভাটা মেসার্স মজুমদার ব্রিকস। ‍সীমানার মধ্যে যেয়ে নের্তৃত্ব স্থানীয় কাউকে পাওয়া গেল না। একজন কর্মীর কাছে ম্যানেজার ও মালিক সম্পর্কে জানতে চাইলে সে বলে ম্যানেজার ভীতরে আছে। তবে বাস্তবে ম্যানেজারকে পাওয়া গেল না। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে স্বয়ং মালিক আসলেন। তাকে আমাদের পরিচয় ও উপলক্ষ জানানো হলো। তিনি সাদরে আমন্ত্রণ জানালেন। প্রথমেই তাকে বিএসটিআই অনুমোদিত আকার  সম্পর্কে জানানো হলো। এরপর কয়েকটি এক নম্বর ইট ( প্রথমে তাদের বাছাইকৃত এর পরে কয়েকটি আমাদের নির্বাচিত) পরিমাপ যাচাই করা হলো। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলো প্রায় প্রতিটা ইট অনুমোদিত আকারে আছে কোন কোনটা পরিমাপের চেয়েও বেশি! সাবাশ!! মনটা ভালো হয়ে গেল। এখন এমন ব্যবসায়ী আমাদের সমাজে আছে? আমাদের আগমন দেখে স্থানীয় কয়েকজন উৎসুক এগিয়ে এলো। সঠিক মাপে ইট বানানোর প্রশংসা করায় স্থানীয় কয়েকজন এবার তার (মালিক) সম্পর্কে বলতে লাগলো। স্যার! লোকটা খুব ভালো। সৎভাবে ব্যবসা করে। দান-ধনও করে নিয়মিত। যাইহোক দান-খয়রাত করা তার ব্যক্তিগত ও ধর্মীয় আচার নিষ্ঠার বিষয়। তবে ব্যবসায়ী ‍হিসেবে অন্তত এ যাত্রায় যে তার সততার পরিচয় পাওয়া গেল সেক্ষেত্রে তাকে স্যালুক না করে বিদায় নিলে তাকে ছোট করা হবে। বাংলাদেশের অনেকের তার কাছ থেকে শিক্ষা নিতে হবে। যেখানে দেশের ২২ শতাংশ ইট ভাটার মালিক ভোক্তাদের ঠকাচ্ছেন। সূত্র: দৈনিক সমকাল ১৬/০২/১৮ খ্রি.।

এবার গন্তব্য মনাগ্রাম এলাকার তালুকদার ব্রিকস। কাছে যেতেই ম্যানেজার সাহেবকে পাওয়া গেল। আমাদের আগমনের হেতু জানানোতে  প্রাথমিকভাবে অস্বস্তি বোধ করলেন। চেহারা দেখে অন্তত তাই মনে হলো। এবার যাচাইয়ের পালা। কয়েকটি পোড়া ও কাচা ইট, ফর্মা পরিমাপে দেখা গেল না তারাও সঠিক মাপ দিচ্ছে। মনটা এবার আরও ভালো হয়ে গেল। যে না সদর এলাকার মানুষগুলো অন্তত ইট কিনে বোধহয় ঠকছেন না। তবে এতো সহজে সারমর্ম টানা ঠিক হবে না। চলতে হবে বহুদূর, দেখতে হবে আরো। ভোক্তারা তাদের নায্য অধিকার ফিরে পাক। অন্যায় –অসত্য- অন্যায্য নিপাত যাক। জয় হোক সততার জয় হোক সুশাসনের। দেখা হবে অন্য কোন দিন অন্য কোন বিষয় নিয়ে। ধন্যবাদ সবাইকে।

 

মো: আছাদুল ইসলাম

সহকারী পরিচালক (কুমিল্লা)